test add

নচিকেতার গানের লিরিক সমূহ / Nociketa Songs Lyrics

আমি অনেককে দিই জলাঞ্জলি
অনেক কিছুই ধরি
সবাই বলে অকাজ, আমি অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করি
, আমি অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করি

আমি সুস্থ্ শরীর ব্যস্ত করি শাসকের অলসতায়
আমি বৃষ্টির মত ঝরে ঝরে পড়ি মানুষের ব্যর্থতায়
সবাই যখন নীরব, আমি একা চীৎকার করি
তোমরাই বল অকাজ, আমি অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করি

তোমরা জানতে চাইবে এতে আমার কিসে লাভ
হয়তো আমি বলব এটা আমার স্বভাব
আমি উজান স্রোতে কাটব সাঁতার, ছেড়ে সোনার তরী
তোমরাই বল অকাজ, আমি অন্ধের দেশে চশমা বিক্রি করি
---------------------------------------- নচিকেতা

সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা

লাল ফিতে সাদা মোজা সু স্কুলের ইউনিফর্ম
টার সাইরেন সংকেত সিলেবাসে মনোযোগ কম
পড়া ফেলে এক ছুট ছুট্টে রাস্তার মোড়ে, দেখে
সাইরেন মিস করা দোকানীরা দেয় ঘড়িতে দম
এরপর একরাশ কালো কালো ধোঁয়া
স্কুল বাসে করে তার দ্রুত চলে যাওয়া
এরপর বিষন্ন দিন বাজেনা মনোবীণ
অবসাদে ঘিরে থাকা সে দীর্ঘ দিন
হাজার কবিতা বেকার সবই তা
তার কথা কেউ বলে না
সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা
সন্ধ্যা ঘনাতো যখন পাড়ায় পাড়ায়
রক থাকতো ভরে কিছু বখাটে ছোড়ায়
হিন্দি গানের কলি সদ্য শেখা গালাগালি
একঘেয়ে হয়ে যেত সময় সময়
তখন উদাস মন ভোলে মনরঞ্জন
দাম দিয়ে যন্ত্রনা কিনতে চায়
তখন নীলাঞ্জনা প্রেমিকের কল্পনা
ওমনের গভীরতা জানতে চায়
যখন খোলা চুলে হয়তো মনের ভুলে
তাকাতো সে অবহেলে দুচোখ মেলে
হাজার কবিতা বেকার সবই তা
তার কথা কেউ বলে না
সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা
অংকের খাতা ভরা থাকতো আঁকায়
তার ছবি তার নাম পাতায় পাতায়
হাজার অনুষ্ঠান প্রভাত ফেরীর গান
মন দিন গুনে এই দিনে আশায়
রাত জেগে নাটকের মহরায় চঞ্চল
মন শুধু সে ক্ষনের প্রতিক্ষায়
রাত্রির আঙ্গিনায় যদি খোলা জানালায়
একবার একবার যদি সে দাড়ায়
বোঝেনি অবুঝ মন নীলাঞ্জনা তখন
নিজেতে ছিলো মগণ প্রানপণ
হাজার কবিতা বেকার সবই তা
তার কথা কেউ বলে না
সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা
------------------------

যখন সময় থমকে দাঁড়ায়

যখন সময় থমকে দাঁড়ায়
নিরাশার পাখি দুহাত বাড়ায়
খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোন
কি আর করে তখন
স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখে মন
যখন আমার গানের পাখি
শুধূ আমাকেই দিয়ে ফাঁকি
সোনার শিকলে ধরা দেয় গিয়ে
আমি শূন্যতা ঢাকি
যখন এঘরে ফেরে না সে পাখি
নিস্ফল হয় শত ডাকাডাকি
খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোন
কি আর করে তখন
স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখে মন
যখন এমনে প্রশ্নের ঝড়
ভেঙ্গে দেয় যুক্তির খেলাঘর
তখন বাতাস অন্য কোথাও
শোনায় তার উত্তর
যখন আমার ক্লান্ত চরন
অবিরত বুকে রক্তক্ষরন
খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোন
কি আর করে তখন
স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখে মন
যখন সময় থমকে দাড়ায়
নিরাশার পাখি দুহাত বাড়ায়
খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোন
কি আর করে তখন
স্বপ্ন স্বপ্ন স্বপ্ন
স্বপ্ন দেখে মন
————————-
অনির্বান

অনির্বান আমার বন্ধু , অনির্বানের সাথে যখন আমার দ্বিতীয়বার দেখা হয়েছিলো তখন সময়টা ছিলো বড় অদ্ভুত আমরা হাইওয়ের উপর দিয়ে অনেকদুরে একটা অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছি, লাল আকাশ , সন্ধ্যে হয়ে আসছে , দুপাশে ফাঁকা মাঠ আমরা চা খাবো বলে গাড়িটা দাড় করিয়েছি একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত চায়ের দোকানে এমন সময় দেখতে পেলাম লাল আকাশকে পেছনে রেখে একটা ছেলে মাঠ পার হয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে আমার সামনে এসে দাড়িয়ে বললোচিনতে পারছিস ? আমি বললামনা ! বললোভালো করে দেখ আমি সেই চুরি যাওয়া আলোতে ওকে চিনলাম , আমার বন্ধু অনির্বান
আমার চোখের সামনে পুরোনো দিনগুলো ছায়াছবির মত ভেসে উঠছে আমি ওকে প্রশ্ন করলামঅনির্বান , তুই এখানে !! বললোতাইতো কথা ছিলো বন্ধু , আমাদের তো এখানেই থাকার কথা ছিলো আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে আমি খুব বোকার মত ওকে প্রশ্ন করলামঅনির্বান কি করছিস এখন ? বললোযা কথা ছিলো বন্ধু , মানুষের মাঝখানেই আছি আমি আর দাড়িয়ে থাকতে পারছিনা , একটা অপরাধবোধ আমাকে গ্রাস করছে বললোতোর দেরি হয়ে যাচ্ছে আমি গাড়িতে যেয়ে বসলাম জানলার কাছে এসে বললোএখন তো তোর নাম হয়ে গেছে , তুইতো বিখ্যাত হয়ে গেছিস ! সুখেই আছিস কি বল ! আমার গাড়ি স্টার্ট নিয়ে নিয়েছে , অনির্বান আমার জীবন থেকে মিলিয়ে যাচ্ছে …..
অনির্বানের শেষ কথা গুলো আজও আমার কানে আলপিনের মত বেঁধে
সুখেই আছিস….
সুখেই আছিস……….
দেখে যা , যা অনির্বান
কি সুখে রয়েছে প্রান
কি সুখে রয়েছি আমি
কি সুখে বেচেছি গান
সেদিনের মিটিঙের মাইক
সেদিনের কলেজের স্ট্রাইক
সেদিনের মাতাল পদক্ষেপ
বে-দিক সিদ্ধান্তের আক্ষেপ
আজ কেঁদে এই মাপা পদচারন
সেদিনের তালের কাছে ম্লান
দেখে যা , যা অনির্বান
কি সুখে রয়েছে প্রান
কি সুখে রয়েছি আমি
কি সুখে বেচেছি গান
শ্রমিকের মুক্তির গান
কৃষকের হাতিয়ার শান
শ্রেনী হীন সমাজের স্বপ্ন
ঘৃনার প্রতিপালনেতে যত্ন
আজ তোর ঘামে ভেজে যে পথের ধূলো
হয়তো সেথায় আমার হতো স্থান
দেখে যা , যা অনির্বান
কি সুখে রয়েছে প্রান
কি সুখে রয়েছি আমি
কি সুখে বেচেছি গান
—————————–

অন্তবিহীন পথ চলাই জীবন

অন্তবিহীন পথ চলাই জীবন
শুধু জীবনের কথা বলাই জীবন
জীবন প্রসব করে চলাই জীবন,
শুধু যোগ বিয়োগের খেলাই জীবন
শুধু সূর্যের পানে দেখাই জীবন,
জীবনকে ভোগ করে একাই জীবন,
একই কক্ষ্যপথে ঘোরাই জীবন,
স্বপনের সমাধি খোড়াই জীবন,
মনের গোপন ঘরে, যে শাপদ ঘর করে,
তাকেই লালন করে চলাই জীবন
ফুটপাথে বেওয়ারিশ শিশুরা জীবন,
রাম, ইসলাম আর যিশুরা জীবন,
অষুধের বিষপান করাই জীবন,
চিকিত্ সাহীন হয়ে মরাই জীবন
যে মেয়েটা রোজ রাতে, বদলায় হাতে হাতে,
তার অভিশাপ নিয়ে চলাই জীবন
প্রতিবাদ প্রতিরোধে নামাই জীবন,
লক্ষ্যে পৌঁছে তবে থামাই জীবন,
স্বপ্নে বেচা কেনা করাই জীবন,
দেয়ালে ঠেকলে পিঠ লড়া জীবন,
প্রতিদিন ঘরে ফিরে, অনেক হিসেব করে,
জীবন চাই না’, তা বলাই জীবন
-----------------------------

অ্যাম্বিশন

কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার,
কেউ হতে চায় ব্যবসায়ী কেউ বা ব্যারিস্টার,
কেউ চায় বেচতে রূপোয় রূপের বাহার চুলের ফ্যাশান
আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন
ঠকানোই মূল মন্ত্র, আজকের সব পেশাতে,
পিছপা নয় বিধাতাও, তেলেতে জল মেশাতে
ডাক্তার ভুলছে শপথ, ঘুশ খায় ইঞ্জিনিয়ার,
আইনের ব্যবচ্ছেদে, ডাক্তার সাজে মোক্তার
যদি চাও সফলতা, মেনে নাও এই সিস্টেম,
ফেলে দাও শ্রোতের মুখে, আদর্শ বিবেক প্রেম
সমাজ মানবে তোমায়, গাইবে তোমারই জয়গান
আমি কোনে বাউল হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন
বড় যদি চাইবে হতে, সেখানেও লোক ঠকানো
সতভাবে বাঁচো বাঁচাও, একথা লোক ঠকানো
সতভাবে যাবে বাঁচা, বড় হওয়া যাবে নাকো
শুধু কথা না শুনে, বড়দের দেখেই শেখ
সবই থাক তোমাদের, আমি বড় চাই না হতে,
ধুলো মাখা পথই আমার, তুমি চোড়ো জয়োরথে
শত লাঞ্ছণা দিও, কোরো আমায় অসম্মান
তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন
কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার,
কেউ হতে চায় ব্যবসায়ী, কেউ বা ব্যারিস্টার,
কেউ চায় বেচতে রূপোয়, রূপের বাহার চুলের ফ্যাশান
আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন
আমি কোনে বাউল হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন
তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশন
-----------------------------------------

এই বেশ ভাল আছি

এই বেশ ভাল আছি এই বেশ ভাল আছি
এই বেশ ভাল আছি, কর্ম কাজ নেই, গাড়ি ঘোড়া কিছু নেই,
অফিস কাছারি নেই, হাজিরা কামাই নেই,
শব্ বা পরিবেশ দূষণ বালাই নেই,
সময় দেই না বলে তেলে বেগুণ জ্বলে গিন্নীর রাগ নেই,
টেলিফোনে ডাক নেই, শহরেতে কারফিউ, লোকজন কেউ নেই,
এক-চার-চার ধারা, ফুটপাথে থাকে যারা, কেউ কোথ্ থাও নেই,
নেই নেই কিছু নেই, তবুও তো আছে কিছু, বলতে যা বাধা নেই
দু নয়নে ভয় আছে, মনে সংশয় আছে,
ধর্মের বাঘ হেসে, আবার উঠোনে এসে,
আশ্রয় চেয়ে যায় মানুষেরই কাছে
তাই, ভয় আছে
দু নয়নে ভয় আছে, মনে সংশয় আছে
ভেঙে গেলে জোড়া যায় মন্দির মসজিদ,
ভাঙা কাঁচ, ভাঙা মন যায় না,
রাম আছে, শ্যাম আছে, কোরাণী সেলাম আছে,
রক্তলোলুপ কিছু হয় না
এদেশ টা ফাঁকা আছে, বিদেশের টাকা আছে,
ধর্ম না গ্রাস করে আমাদের পাছে
তাই, ভয় আছে
দু নয়নে ভয় আছে, মনে সংশয় আছে
এই বেশ ভাল আছি এই বেশ ভাল আছি
এই বেশ ভাল আছি, ভাবার সময় আছে, তবুও ভাবনা নেই,
পার্কে তে ঘোরা নেই, সিনেমায় যাওয়া নেই,
উঠতি যুবকদের যাতনার সীমা নেই,
শিহরণ আনে প্রেমে এমন বাতাস নেই,
যুবতীর কটাক্ষ, চীরে দেয় বক্ষ, হায়রে এমন দিনে
সেই অবকাশ নেই, চাল নেই, ডাল নেই, পয়সার দাম নেই,
তবুও টিভির স্ক্রীনে খেলার বিরাম নেই
নেই নেই কিছু নেই, তবুও তো আছে কিছু, বলতে যা বাধা নেই
দু নয়নে ভয় আছে, মনে সংশয় আছে
----------------------------------

চোর
ভিড় করে ইমারত, আকাশটা ঢেকে দিয়ে,
চুরি করে নিয়ে যায় বিকেলের সোনা রোদ
ছোটো ছোটো শিশুদের শৈশব চুরি রে,
গ্রন্থ-কীটের দল বানায় নির্বোধ
এরপর চুরি গেলে বাবুদের ব্রীফ-কেস
অথবা গৃহিণীদের সোনার নেকলেস,
সকলে সমস্বরে, একরাশ ঘৃণা ভরে
চিত্কার করে বলে
চোর, চোর, চোর, চোর, চোর
প্রতিদিন চুরি যায় মূল্যবোধের সোনা,
আমাদের স্বপ্ন, আমাদের চেতনা
কিছুটা মূল্য পেয়ে ভাবি বুঝি শোধ-বোধ,
ন্যায় নীতি ত্যাগ করে, মানুষ আপোস রে,
চুরি গেছে আমাদের সব প্রতিরোধ
এর পর কোনো রাতে, চাকরটা অজ্ঞাতে,
সামান্য টাকা নিয়ে ধরা ড়ে হাতে নাতে
সকলে সমস্বরে, একরাশ ঘৃণা ভরে
চিত্কার করে বলে
চোর, চোর, চোর, চোর, চোর
প্রতিদিন চুরি যায় দিন বদলের আশা,
প্রতিদিন চুরি যায় আমাদের ভালবাসা
জীবনী শক্তি চুরি গিয়ে আসে নিরাশা,
সংঘাত্ প্রতিঘাত্ দেয়ালে দেয়ালে আঁকা,
তবু চুরি যায় প্রতিবাদের ভাষা
কখনো বাজারে গেলে, দোকানী কিশোর ছেলে,
কাঁপা কাঁপা হাত নিয়ে, ওজনেতে কম দিলে,
সকলে সমস্বরে, একরাশ ঘৃণা ভরে
চিত্কার করে বলে
চোর, চোর, চোর, চোর, চোর
-----------------------------

নীলাঞ্জনা (দুলছে হাওয়ায়)

দুলছে হাওয়ায় , না না না ফুল নয়
দখিনা বাতাসে নাগপাশে সময় নয়
খোলা বারান্দায়, এই নিরজনতায়
সিলিংয়ের বন্ধনে, মাটির ব্যাবধানে
দুলছে স্খলিত বসনা
নীলাঞ্জনা নীলাঞ্জনা ।।
প্রেমিকের স্পর্শ
আনবেনা শিহরন আর মনে,
কেয়ার অফ ফুটপাত নচিকেতা দুটি হাত
শূণ্যে ছুড়বে ফাঁকা আস্ফালনে,
উড়ছে মাছি , না না না অবুঝ নয়
সে আজ একা তাই ঘিরে মাছিরা রয়
খোলা বারান্দায়, এই নিরজনতায়
সিলিংয়ের বন্ধনে, মাটির ব্যাবধানে
দুলছে স্খলিত বসনা
নীলাঞ্জনা নীলাঞ্জনা ।।
লাশকাটা ঘরে যদি
ছেরা হয় তার বুক সঙ্গোপনে,
দেখবে সেখানে রাখা বিবর্ণ
একমুঠো স্বপ্ন যতনে
যে স্বপ্ন কোন কিশোরের দেয়া উপহার
গানের ভাষায় ,
যে স্বপ্ন প্রথাগত মিথ্যে কপট সংসারের আশায়
এখন সময় না না না রাত্রি নয়
সে আজি জীবনরাত্রি পেরিয়ে গেছে হায়
খোলা বারান্দায়, এই নিরজনতায়
সিলিংয়ের বন্ধনে, মাটির ব্যাবধানে
দুলছে স্খলিত বসনা
নীলাঞ্জনা নীলাঞ্জনা ।।

-----------------------------
বৃদ্ধাশ্রম (ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার)

ছেলে আমার মস্ত মানুষ, মস্ত অফিসার
মস্ত ফ্ল্যাটে যায় না দেখা এপার ওপার
নানান রকম জিনিস আর আসবাব দামী দামী
সবচেয়ে কম দামী ছিলাম একমাত্র আমি
ছেলের আমার আমার প্রতি অগাধ সম্ভ্রম
আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম!
আমার ব্যবহারের সেই আলমারি আর আয়না
ওসব নাকি বেশ পুরনো, ফ্ল্যাটে রাখা যায় না
ওর বাবার ছবি, ঘড়ি-ছড়ি, বিদেয় হলো তাড়াতাড়ি
ছেড়ে দিলো, কাকে খেলো, পোষা বুড়ো ময়না
স্বামী-স্ত্রী আর আ্যালসেশিয়ানজায়গা বড়ই কম
আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম!
নিজের হাতে ভাত খেতে পারতো নাকো খোকা
বলতাম আমি না থাকলে কী করবি রে বোকা?
ঠোঁট ফুলিয়ে কাঁদতো খোকা আমার কথা শুনে-
খোকা বোধ হয় আর কাঁদে না, নেই বুঝি আর মনে
ছোট্টবেলায় স্বপ্ন দেখে উঠতো খোকা কেঁদে
দুহাত দিয়ে বুকের কাছে রেখে দিতাম বেঁধে
দুহাত আজো খুঁজে, ভুলে যায় যে একদম-
আমার ঠিকানা এখন বৃদ্ধাশ্রম!
খোকারও হয়েছে ছেলে, দুবছর হলো
তার তো মাত্র বয়স পঁচিশ, ঠাকুর মুখ তোলো
একশো বছর বাঁচতে চাই এখন আমার সাধ
পঁচিশ বছর পরে খোকার হবে ঊনষাট
আশ্রমের এই ঘরটা ছোট, জায়গা অনেক বেশি-
খোকা-আমি দুজনেতে থাকবো পাশাপাশি
সেই দিনটার স্বপ্ন দেখি ভীষণ রকম
মুখোমুখি আমি, খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম!
মুখোমুখি আমি, খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম!
মুখোমুখি আমি, খোকা আর বৃদ্ধাশ্রম!
-------------------------------------------------

ভয়

ডাইনে বাঁয়ে, গঞ্জে গাঁয়ে,
পুরানো অথবা নতুন অধ্যায়ে,
বিশৃংখলা যতই বাড়ুক,
গণতন্ত্র রাষ্ট্র যন্ত্র দুচোখ বুজে রয়,
হয় ! হয় ! হয় ! ভয় !
পাছে ভোট নষ্ট হয়
পড়াশুনা আর ভাবনা চিন্তা,
নাচছে শীকেয়তা ধিন্ ধিন্ তা !
বিরাশি প্রহর সংকীর্তন,
মাইকে প্রবল চিত্কার
রাষ্ট্র হেসে বলেন -
যে গণতান্ত্রিক অধিকার
শব্ দূশণ প্রতিকার,
সে তো বিজ্ঞাপনের কথা
ভবিষ্তের কথায় নেই কারোর মাথাব্যথা
আসলে, হাজারটা লোক, হোতাদের ভোট,
রয়েছে ধর্ম ময়
হয় ! হয় ! হয় ! ভয় !
পাছে ভোট নষ্ট হয়
শহরের এক কোণে বেড়ে চলে
অন্ধকারের চক্র,
সমীজ-বিরোধী, মাস্তান, ফোড়ে,
একতা ওদের অস্ত্র
ওদেরই তো দেখি ভোটের সময়,
নানান রঙের রাঙানো জামায়,
রাষ্ট্র তখন প্রাণপনে ভোলে
ওদের পরিচয়
তাই ভয় ! ভয় ! ভহয় ! ভয় !
পাছে ভোট নষ্ট হয়
-------------------------

সরকারি কর্মচারী

বারোটায় অফিস আসি, দুটোয় টিফিন
তিনটেয়ে যদি দেখি সিগন্যাল গ্রীন,
চটিটা গলিয়ে পায়ে, নিপাট নির্দ্বিধায়
চেয়ারটা কোনোমতে ছাড়ি
কোনো কথা না বাড়িয়ে,
ধীরে ধীরে পা বড়িয়ে
চারটেয় চলে আসি বাড়ি
আমি সরকারি কর্মচারী
আমি সরকারি কর্মচারী
আমি অফিসেতে বসে বসে আনন্দলোক পড়ি,
টাডা থেকে ছাড়া পেল সঞ্জয়
আর টেবিলেতে ফাইল এসে জমে জমে
দূর থেকে মনে হয় হিমালয় !
হপ্তায় হপ্তায় আন্দোলনের খেলা,
টি-, ডি- বাড়ানোর জন্য
ফি মাসে মাসে যদি এক দিনও কাজ করি,
অফিসটা হয়ে যায় ধন্য
কারো ফাইল পাস্ করে নির্লজ্জের মতো
হাতখানা পেতে দিতে পারি
আমি সরকারি কর্মচারী
আমি সরকারি কর্মচারী

(মা, মাগো, জগত্ জননী, অন্নদায়িনী মা আমার রক্ষা কোরো ! )
ঘুশ আমার ধর্ম ঘুশ আমার কর্ম
ঘুশ নিতে কি শংসয় ?
প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া এই দেশে অপরাধ
ঘুশ খাওয়া কখনই নয়
তাই কারো ফইল পাস্ করে নির্লজ্জের মত
হাত খানা পেতে দিতে পারি
আমি সরকারি কর্মচারী
আমি সরকারি কর্মচারী